আত্মহত্যার পথে নিয়ে যায় যে গেইম!
আত্মহত্যায় প্ররোচনা জাগায় এমন এক গেইম নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা। এই গেইমটির নাম হচ্ছে ব্লু হোয়েল গেইম যা ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ নামেও পরিচিত। এই গেইমে খেলোয়াড়দের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে দেওয়া হয়, পুরো কাজের সিরিজ সম্পন্ন করার জন্য সময় থাকে ৫০ দিন। প্রতিটি কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর একটি করে ছবি পাঠাতে হয় গেইমারকে। একদম সব শেষে চূড়ান্ত কাজ হিসেবে খেলোয়াড়কে আত্মহত্যা করতে বলা হয়। ২০১৩ সালে রাশিয়ায় এফ৫৭ নামে যাত্রা শুরু করে গেইমটি। এই গেইম খেলার কারণ প্রথম আত্মহত্যার অভিযোগ আসে ২০১৫ সালে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ফিলিপ বুদেইকিন নামের এক সাবেক মনোবিদ্যা শিক্ষার্থী এই গেইম বানিয়েছেন বলে দাবি করেন। কিন্তু কেন এই গেইম বানালেন তিনি? তার দাবি, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে যাদের কোনো মূল্য নেই বলে তিনি বিবেচনা করেন তাদেরকে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত করার মাধ্যমে সমাজকে পরিষ্কার করা।
সম্প্রতি পার্থ সিং নামের ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরকে মাওদাহা গ্রামে তার নিজ শোবার ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে আইএএনএস-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ষষ্ঠ শ্রেণীর এই শিক্ষার্থীর হাতে তার বাবার ফোনটি পাওয়া যায়। ওই কিশোরের মরদেহ যখন নামানো হয় তখন ফোনটিতে গেইমটি চলছিল। পার্থর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি কয়েকদিন ধর এই গেইমটি খেলছিলেন। আইএএনএস-এর আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েকদিন আগে ভারতের বিবি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির রেজিস্ট্রার এই গেইম নিয়ে এক শিক্ষার্থীর সন্দেহভাজন আচরণের বিষয়ে দেশটির ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর এক কর্মকর্তাকে অভিহিত করেন বলে সংস্থাটির এক সূত্র জানিয়েছে। প্রকৌশল বিভাগের ওই শিক্ষার্থী দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার এক বাসিন্দা। তিনি ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ-এর অষ্টম লেভেল পর্যন্ত পৌঁছেছেন। পরে ওই শিক্ষার্থী বলেন, “আপনি ফেরত আসতে পারবেন না। এই গেইমটি খেলার চেষ্টা করলে আপনি নিজেকে মেরে ফেলতে বাধ্য হবেন। আমি অনেক ভাগ্যবান যে আমার কলেজ কর্তৃপক্ষ আর বন্ধুরা ও সেই সঙ্গে সিআইডি আমাকে কাউন্সেলিং ও দিকনির্দেশনার দেওয়ার মাধ্যমে আমাকে এই পরিস্থিতি থেকে উঠে আসতে সহায়তা করেছেন।” সেই সঙ্গে এই গেইম খেলতে খেলতে নিজের বাম হাত ব্লেড দিয়ে কাটার চিহ্ন দেখান। ভারতের সিআইডি এই গেইম খেলার ভয়াবহতা নিয়ে সতর্কতা ছড়াতে প্রচারণা চালাচ্ছে। দেশটিতে হঠাৎ জনপ্রিয় হয়ে পড়ায় ভারত সরকার গুগল, ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মাইক্রোসফট আর ইয়াহুর মতো ইন্টারনেট জায়ান্টগুলোকে এই গেইমটির লিংক সরাতে জোর দিচ্ছে।